আওয়ামীলীগ ইতিহাসকে বিকৃত করতে করতে ইতিহাসকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে। সত্য ইতিহাস এখন মুখ লুকিয়ে কাঁদছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মহা খলনায়ককে বানানো হয়েছে মহানায়ক। স্বাধীনতার ঘোষণার সবচে বড় বিরোধিতাকারীকে বানানো হয়েছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি। যেখানে তৎকালীন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ স্বীকার করেছেন যে, ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে স্বাধীনতার ঘোষণা লিখে ও টেপরোকোর্ডে রেকোর্ড করে নিয়ে বারবার অনুরোধ করার পরও ঘোষণাটি না দিয়ে পাকিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে (তাজউদ্দীন: নেতা ও পিতা- শারমিন আহমদ)।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রী হয়ে শুরু করে মিথ্যার ইতিহাস। নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করে। বানাতে থাকে স্বাধীনতার ঘোষণার গাঁজাখোরি গালগল্প। যুদ্ধের ৯ মাস পাকিদের আতিথেয়তায় থেকে যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছাড়াই তিনি ঘোষণা করলেন ৩০ লক্ষ মানুষ যুদ্ধে নিহত হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংসতা চরম ভয়াবহ ছিল। কিন্তু তারজন্য কী মিথ্যার আশ্রয় নিতে হবে? মিথ্যার আশ্রয় নিয়েতো সত্যিকার শহীদদের অপমান করা হচ্ছে। খোদ ভারত থেকেই ৩০ লাখের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবেগের দিক থেকে আমাদের কাছে পাকিস্তানের নৃশংসতা পৃথিবীর সর্বোচ্চ ঘৃণার। কিন্তু বানোয়াট শহীদের সংখ্যা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। শেখ মুজিব মিলিয়ন আর লাখের হিসেব না জানায় ভুল করেছে আর সেই ভুলকে আজীবন কেন বহন করতে হবে? এরকমই আরেকটি ঘটনা ইতিহাসের চরম মিথ্যাগল্প হিসেবে চিত্রিত হয়ে আছে।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতম বর্বরতার কথা সর্বজনবিদিত। তাদের বর্বরতার প্রমাণ দেয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন নেই। সূরা আনফালের ২২ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে খারাপ জানোয়ার ঐসব বধির-বোবা লোক, যারা আকলকে (বুদ্ধিকে) কাজে লাগায় না" (৮ঃ২২)।
নিউজের ছবি দুটো বাংলাদেশের মানুষের কাছে অনেক পরিচিত। শতকরা ২/১জন ছাড়া সকলেই জানেন যে, ছবি দুটোতে ইউনিফর্মধারী ব্যক্তিগণ পাক আর্মির। প্রথমটাতে তারা চেক করছে যে লুঙ্গি পরিহিত ব্যক্তি মুসলিম, না হিন্দু (মুসলমানি করা হয়েছে কি না)। দ্বিতীয় ছবিটিও পাকসেনাদের বর্বরতা প্রকাশের জন্য বহুল ব্যবহৃত। অথচ, ছবি দুটোই ভারতীয় ফটোগ্রাফার কিশোর প্যারেখ এর তোলা, যিনি ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকামুখী ভারতীয় সেনাবাহিনীর মিডিয়া কভারেজে নিয়োজিত ছিলেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থে সুস্পষ্টভাবে তিনি লিখেছেন যে, এই সৈনিকগণ "ভারতীয়", যারা ১৯৭১ সালে ঢাকার পথে অগ্রাভিযানের সময় এভাবে অস্ত্রের খোঁজ করেছে বা অত্যাচার করেছে। সৈনিকদের সাথে যেই অস্ত্র দেখা যাচ্ছে, তা ভারতীয়রাই ব্যবহার করতো, পাকসেনারা নয়। ছবিগুলো ১৯৭২ সালে তাঁর প্রকাশিত বই, "Bangladesh: A Brutal Birth" এ দেয়া আছে।
একটি জাতির সত্যিকারের ইতিহাস নির্মিত হওয়া জরুরি। স্বাধীনতার প্রায় ৪ যুগ পরও কেন সত্যিকার শহীদের সংখ্যা নিরূপণ সম্ভব হলো না, কেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক জিয়াউর রহমানকে স্বীকার করা হচ্ছে না, কেন মিথ্যা ছবি দিয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিরূপণ করতে হবে, কেন মিথ্যা ও ভুয়া ছবি ব্যবহার করে হিন্দু নির্যাতনের বিষয়টা তুলে ধরা হচ্ছে, কেন সাহিত্যগুলো প্রমাণ করতে চাচ্ছে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দুরাই বেশি নির্যাতিত ছিল? কারণ ইতিহাসকে বিকৃত না করলে শেখ মুজিবের মতো মীরজাফরকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানো যাবে না। যুদ্ধের সময় পালিয়ে যাওয়া খলনায়ককে মহানায়ক বানানো যাবে না। হিন্দুগোষ্ঠীকে এদেশে অতি দেশপ্রেমিক হিসেবে দেখানো যাবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন